দুইদিনের বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে হাটহাজারীর নাজিরহাট নতুন ব্রিজ এলাকায় হালদার তীর রক্ষা বাঁধ ভেঙে গেছে। বৃহস্পতিবার রাত ৯টা থেকে লোকালয়ে পানি ঢুকছে। প্লাবিত হয়েছে হাটহাজারীর নতুন নতুন এলাকা।উপজেলার ফরহাদাবাদ ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া ফটিকছড়ি উপজেলা ও সংলগ্ন এলাকায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন এক লাখ মানুষ। নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটছেন দুর্গত এলাকার মানুষ।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বাঁধ উপচে ও ভেঙে যাওয়া বাঁধের অংশ দিয়ে পানি ঢুকে উপজেলার ফরহাদাবাদ ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে অন্তত শতাধিক ঘরবাড়ি ডুবে গেছে।

পানি প্রবেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী বলেন, ‘গত বুধবার থেকে হালদার পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্তত ২২টি স্থানে বাঁধ ভেঙেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ভাঙা অংশে জিও ব্যাগ ফেলে পানি প্রবেশ বন্ধের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।’ বাঁধ ভেঙে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়কের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এতে ওই সড়কে যানজট সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে, স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় উপজেলা ফটিকছড়ি। দুইদিন ধরে পানির নিচে ডুবে রয়েছে শত শত বাড়িঘর, ফসলি জমি, হাটবাজার ও দোকানপাট। বন্যার পানি থেকে রক্ষা পেতে অন্তত অর্ধলক্ষ মানুষ গৃহছাড়া হয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে গেছেন। সেনাবাহিনী, নৌবাহিনীর পাশাপাশি বানভাসী মানুষের পাশে দাড়িয়েছে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও।

বন্যার্তরা জানান, গত ৫০ বছরেও ফটিকছড়িবাসী যেসব এলাকায় পানি উঠতে দেখেনি, সেসব এলাকা অন্তত ৫-৭ ফুট পানির নিচে তলিয়ে আছে। বন্যার পানি কমতে শুরু করলেও পুরোপুরি নামতে কত সময় লাগে সেটাই দেখার অপেক্ষা।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বন্যার পানিতে উপজেলার পূর্ব সুয়াবিল, পশ্চিম সুয়াবিল, নাজিরহাট পৌরসভা, পাইন্দং, ভুজপুর, হারুয়ালছড়ি, শোভনছড়ি, সমিতির হাট, বাগানবাজার, হেঁয়াকো, নারায়নহাট ও সুন্দরপুর এলাকার অন্তত লক্ষাধিক মানুষের বাড়িঘর তলিয়ে আছে।

ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন, স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার মুখোমুখি হয়েছে ফটিকছড়ি। গত বৃহস্পতিবার বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ার পর থেকে উপজেলা প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবকরা বন্যাকবলিতদের উদ্ধার, তাদের নিরাপদ আশ্রয় ও খাদ্য সহায়তা প্রদান করছে।